অঞ্জলি দে নন্দী, মমর তিনটি কবিতা--
ঠাকুর
মাপরমহংসকে চেনার চেষ্টা করবে যেদিন,
নিজেকেই নতুনরূপে আবিষ্কার করবে সেদিন।
নিতে যে হবে কতগুলো জন্ম, তাঁকে চিনতে...
শুধু এটাই হোক মনুষ্য মনের চিন্তে!
তা হয় যদি -
তবে শ্রীরামকৃষ্ণ সাগরে মিলবে অবশ্যই এ জীবননদী।
ঠাকুর তো আছেন ভক্তদেরই কাছে।
শুধু সুভাবনার ওপরে কুঢাকনা পরে আছে।
নিজেকেই সরাতে তা হবে,
তাঁর কৃপা পাওয়া যাবে তবে।
কেউই জানে না আসবে সেদিন কবে?
তুমি-আমি
আমি সাগরের উচ্ছাস।
তুমি আমার গভীরতার বিশ্বাস।
আমার নোনা নিঃশ্বাস
মেঘের সৃষ্টি।
ফের আমারই পরে ঝরে বৃষ্টি।
আমার ঊর্ধ দৃষ্টি।
আকাশের প্রতিবিম্ব আনে।
আমি উচ্ছসিত জোয়ার, পূর্ণ শশীর টানে।
আমি সমৃদ্ধ আমারই তরঙ্গ-গানে।
আমি না থামা চঞ্চল।
অনন্ত আমার জল।
তুমি আমার তলাতল, অতল।
আমি নদীর মিলন-স্থল।
আমার আছে কাছে আনার-টানার বল।
আমার মন্থনে উত্থিত হলাহল
করেছিলেন পান যিনি
নীলকন্ঠ নামে তো পূজ্য তিনি।
তাঁর কন্ঠ-পরশ আমি চিনি।
আমি হুগলীর মেয়ে
আমি ছিলুম বঙ্গের হুগলীর মেয়ে।
পূজো করতুম পুকুরে নেয়ে।
বড় হয়েছি তাজা ফল, আনাজ খেয়ে।
যখন দামোদরের বান আসতো ধেয়ে
তখন আমাকে ইস্কুলে পৌঁছতো মাঝি,নৌকা বেয়ে।
সেখানে পৌঁছে যেয়ে,
ইস্কুল শুরু করতুম প্রার্থনা গান গেয়ে।
ক্লাসে উঠতুম প্রতিবছর ফার্স্টের রেজাল্ট পেয়ে।
যখন আকাশ কালো মেঘে যেতো ছেয়ে
তখন ওপরের দিকে দেখতুম অপলক চেয়ে চেয়ে।
ভোরে ঘুম ভাঙাতো বোস্টম কীর্তন গেয়ে গেয়ে।
প্রকৃতির কোলে জীবন ছিল না একঘেয়ে।
No comments:
Post a Comment