Friday, 6 May 2022

বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের দুটি কবিতা--


বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের দুটি কবিতা--


পর্ণকুটির 




আমি এখন ভীষণ ব্যস্ত থাকার কুটির বানাতে। 

যত কিছু সরঞ্জাম জোগাড় করছি মনের হরষে ।

মনটাও বেশ  প্রফুল্লিত নতুন সৃষ্টির  আনন্দে। 

মনের মায়াজালের কাঠকুটো সবই  পাচ্ছি। 

অনায়াসে  হাতের নাগালের ভিতরেই। 

সে খুব সূক্ষ্ম ঐন্দ্রজালিক পরিপক্ক কাঠামো 

তোমার ধ্যানের  আলো এখানে পৌঁছাবে না গো। 

দিয়েছি বেড়াজাল নানারকম ঐশ্বরিক শক্তিতে ।

তুমি ভেবেছো ধ্যানের সূক্ষ্ম তরঙ্গে মিলিত হবে। 

সে এক  বিদ্যুৎ ঝলকের  সংস্পর্শ সূক্ষ্মতম। 

শারীরিক নয় মানসিক নয় সাংকেতিক। 


দরজা-জানালা সব শক্তি তোমার চোখের পলক। 

ঘরের ছাউনি আচ্ছাদিত তোমার দেহের রোমকূপ। 

চারিদিকের সীমানা আলুলায়িত কেশ কুন্ডল ।

পর্ণকুটির যে তোমার সুশ্রী মুখমণ্ডল। 


আমি সরোবরে স্নান  করে পরিধান স্বর্ণ পদ্মপত্র। 

উত্তরীয়টি সে এক  অভূতপূর্ব লতাগুল্ম দল। 

শ্বেত চন্দন কপালে লেপন ঋষিমুনি অবিকল। 

ধানের আসন সে মৃত্তিকা শ্বেত পাথর দ্রুমদল। 



আশ্রমবাসী 


আমি এখন সংসার ত্যাগ করেছি। 

গভীর জঙ্গলে একটা গাছ তলায় থাকি । 

প্রায়ই চোখ বন্ধ থাকে। 

মাঝে মাঝে তাকাই অর্ধ নিমীলিত। 

চারিদিকে সবুজ বনানী বাতাসে আন্দোলিত। 

যথেষ্ট ফুল ফুটে থাকে বুনোফুল। 

কিছু নাম জানি কিছু জানিনা 

বড় শান্তি পাই মনটাও বেশ ভালো। 


ক্ষুধায় কিছু ফলমূল খেয়ে বেশ আছি। 

স্নিগ্ধ হাওয়া কথা বলে আমার সাথে। 

পাখিরা গান গায় তাদের নিজস্ব ডাকে। 

পাশে টলটল একটা সরোবর। 

সেখানে ফুল প্রজাপতি ভ্রমরের খেলা চলছে। 

আকাশ এখানে ঘন নীল সাদা মেঘ। 

হরিণ শিশু খরগোশরাও লাফালাফি করে বেশ। 

ভালো একটা আশ্রমে  যেন আছি বসে। 


ভাবছি একটা মনোমত কুটির বানাবো। 

চোখ বন্ধ মাঝে মাঝে খুলে আবার বন্ধ করি। 

স্বর্গীয় আনন্দে আছি বেশ ভাল আছি। 

একটা হরিণশিশু এল লাফিয়ে কি যেন খুঁজছে। 

অদূরে দাঁড়িয়ে মা হরিণ তাকিয়ে আছে। 

যেন বলছে আয় বাছা আমি এখানে। 



** বীরেন্দ্রনাথ মন্ডল, 28 এপ্রিল 2022।

ভুবনেশ্বর, ভারতবর্ষ । 

1 comment:

Anonymous said...

অসাধারণ

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা--

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা-- জীবাশ্ম আর পাপোশে ধুলো ঝেড়ে ঘরে ঢুকি না  কারন ধুলোই আমার আবাস আর আমি সেই ধুলোর মধ্যে মিশে থাকা জীবাশ্ম ...