Tuesday, 17 May 2022

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা--

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা--

জীবাশ্ম

আর পাপোশে ধুলো ঝেড়ে ঘরে ঢুকি না
 কারন ধুলোই আমার আবাস
আর আমি সেই ধুলোর মধ্যে মিশে থাকা জীবাশ্ম
 চলচ্ছক্তিহীন, মেরুদন্ডহীন
 বিগত স্মৃতির চিহ্ন
এখন ঝড়ের অপেক্ষায় থাকি
 যখন ধুলো জেগে উঠে চোখে মুখে  কর্কশ ঝাপটা মেরে জিগ্গেস করবে আমাদের দোষ কি ?

 কাব্য

আকাশের রাঙা রঙ দেখে কেউ কেউ মনে করেছিল 
 বসন্তের সোহাগী ছোঁওয়ায় শিমুল, পলাশ
 গায়ে রাতের চাদর টানতে ভুলে গেছে
 তারপর গল্প উপগল্প.......

বটগাছের শিকড় অনেক গভীর
ভারতবাসী মাত্রই মহাভারত জানে।

Saturday, 7 May 2022

সহবাস --অপূর্ব পাল


সহবাস --অপূর্ব পাল


এসো আমরা ঘুমের আয়োজন করি

চিত্তে ও চৈতন্যে পরিচ্ছন্ন হই 

শাদামেঘ বিছানায় ফুল ও ছড়িয়ে দিই খই 

আর খইয়ের মতো রজনীগন্ধা রাত, 

তুলসি তিলক ;

ধূপের গন্ধে ভরে যাক রাত্রি চরাচর 

তোমার পায়ের প্রান্তে আলতার সাজ 

কপালে কুসুম কুমকুম 

সারাগায়ে মেখে আছি তোমার শ্রীনাম ; 


এসো আমরা সহবাস আয়োজন করি

সহবাস সে তো সহযাত্রারই নাম

যাত্রাপথে আনন্দ চন্দন ছাড়া আর

কি আছে নেবার! 

এসো, 

ঘুম ঘরে এবার আমরা সমাধিস্থ হই...


______________________💕 অপূর্ব পাল

বিষন্ন আসরে--শিখা মালিক


বিষন্ন আসরে--শিখা মালিক


মনের দুর্জয় প্রাচীরে বার বার

আছড়ে পড়ছে বিষন্নতার ঢেউ ,

সাগর বাতাসে কেবলই ভেসে চলে উদ্ভ্রান্ত  বিবেক  - মৎস্য সুখের আশায়।

সময়ের প্রতিটি প্রকোষ্ঠ 

ঘুন পোকার কামড়ে আর্তনাদ 

করছে।

ওরা ফাগুনের গানে গ্রীষ্মকে টানে- যারা একদিন গ্রীষ্মের প্রখরতায় প্রেমের বসন্ত শুরু করেছিল।

রোদের আঁধারে কার যেন হাতছানি,

ওড়বার সাধ নিয়ে পাখিটা কেবলই  ডানা ঝাপটায়।

শমিত কর্মকারের দুটি অণু কবিতা --


শমিত কর্মকারের দুটি অণু কবিতা --


নাচে মন


বইছে নদী ভাসছে তরী

ডাকছে ভোরের কত পাখি। 

নতুন ভোরের সূর্যোদয়টা

সকলে আমরা ভীষণ মনে রাখি। 

সবুজ ঘাসে হাঁটতে হাঁটতে

কতো কিছু মনে পড়তে পারে।


            -------------


নব আনন্দ


আসে নতুন বছর নিয়ে আসে আশা, 

আমার তোমার মনে বাঁধে অনেক বাসা। 

কি করবো কি করবো ভেবে যে না পাই, 

বসে বসে পথ খুঁজি যে তাই। 

আসে উৎসব একের পর এক, 

এ যে আনন্দ অনেক।

Friday, 6 May 2022

বসন্ত কণ -- তাপসকিরণ রায়

 


বসন্ত কণ -- তাপসকিরণ রায়

 

অকাল হাওয়ায় বসন্ত ছুটে যাচ্ছে দেখো--

কিছু দুরন্ত হাওয়া, তুমি এলোমেলো,

অবিন্যস্ত চুলের ফাঁকের দৃশ্যাবলী।  

কখনও পলাশ খুঁজে ফিরতে ফিরতে

ঠিঠুর শীতের মাঝে কাল হারিয়ে যায়--

কিছু চাঁদ আলোয় তোমার বনজ শরীর ঘ্রাণ।  

 

অকাল বৃষ্টি খরায় ধূসর বসন্ত সময় ছুটে যাচ্ছে দেখো--  

আমাদের শরীরে সোঁদা গন্ধ, ডুবে থাকা প্রচ্ছন্ন অপরাধ,  

মনের প্রশাখায় প্রেমিকার ঘ্রাণ শুঁকি...

 

বাসি রজনীগন্ধা,

মজা বিছানার বাস, অভ্যাসের স্যাঁতস্যাঁতে আর্দ্র মন

আজ বসন্ত ছুঁয়ে আছে নিমগ্ন প্রেমের  দৈহ্য দেওয়াল,

মহুয়া ঘ্রাণের মাঝে

প্রেমিকা চেটে যাচ্ছে তোমার ল্যাশল্যাশে ঠোঁট--। 

তবু ছটাক খানেক সৌরভ

কোনও গোধূলি রঙ তোমার পলাশ ঠোঁটে না হয়

লেগে থাক এক কণ বসন্ত।

সুদীপ্ত বিশ্বাসের গুচ্ছ কবিতা


সুদীপ্ত বিশ্বাস এর গুচ্ছ কবিতা 


বাউল / সুদীপ্ত বিশ্বাস 


একলা বেশ তো আছি,একলা থাকাই ভালো

দুপুরে ডিস্কো নাচি, রাতে পাই চাঁদের আলো।

কোনো এক নিঝুম দুপুর, কিংবা গভীর রাতে

মনে আর পড়েই না তো,টান দিই গঞ্জিকাতে।

পরোয়া করব কেন? সমাজটা দিচ্ছে বা কী?

ছোট্ট জীবন আমার, তাইতো নাচতে থাকি।

পলকা এই জীবনে, কী হবে দুঃখ এনে?

চল্ না উড়াই ঘুড়ি, সুতোতে মাঞ্জা টেনে।

লাফিয়ে পাহাড় চড়ে, সাঁতরে নদীর বুকে

কবিতা দু'এক কলি আসলে রাখছি টুকে।

এভাবে কাটছে তো দিন,তোমাকে আর কী খুঁজি?

জানিনা কোথায় তুমি, আমাকে ভাবছো বুঝি?

ভাবলে কী হবে আর, নদীতে জল গড়ালে

চাঁদটা বন্ধু আমার, গভীর এই রাত্রিকালে 

গাছেরা আগলে রাখে, পাখিরা গাইতে থাকে

ঘরে আর যায় কী ফেরা? ওই যে বাউল ডাকে !


রাত

- সুদীপ্ত বিশ্বাস

জেগে বসে আছি রাতের গভীরে একা।গোটা পৃথিবীটা ঘুমে

আকাশের বুকে অনেক তারার মেলা,কিছু লোক চ্যাটরুমে

সম্পর্ক তৈরিতে এখনও ভীষণ ব্যস্ত।ওড়ে রাতচরা পাখি

শাল-পিয়ালের আধো ঘুমে ভেজা ডালে।কবিতায় লিখে রাখি

ছলাৎ-ছলাৎ শব্দে নদীটা এগোয়, সাগরের অভিসারে

পাহাড় চূড়াটা একাএকা জেগে থাকে এ রাতের অন্ধকারে

লাজুক চাঁদটা গাঁয়ের বধূর মতো ঘোমটায় মুখ ঢাকে

দু'একটা পাতা খসে যায় চুপিসারে, কেই বা হিসেব রাখে?

বনের গভীরে নিশাচর ছুটে যায়, রাতের শিশির ঝরে

খুব মমতায় পৃথিবীর সারা গায়ে। মনে পড়ে মনে পড়ে

হারানো সেসব বাঁধাবাঁধি করে বাঁচা, সুরেসুরে বাঁধা তার

গভীর গভীর অজানা অলীক দেশে প্রেম ভরা অভিসার...


কাঁটাতার

- সুদীপ্ত বিশ্বাস

আমরা পাখিরা উড়ে যাই কতদূরে

কত দেশ-গ্রাম ইয়ত্তা নেই তার

মানুষেরা শুধু ঝগড়া-বিবাদ করে

মানুষের শুধু দেশভাগ কাঁটাতার।


আমরা নদীরা বয়ে যাই কত দূরে

পাহাড়ের থেকে দূর সাগরের পার

মানুষেরা শুধু দ্বন্দ্ব-বিবাদ করে

মানুষের শুধু দেশভাগ কাঁটাতার।


আমরা আলোরা সূর্যের থেকে এসে

ভেদাভেদ ভুলে ঘোচাই অন্ধকার

মানুষেরা শুধু দ্বন্দ্ব-বিবাদ করে

মানুষের শুধু দেশভাগ কাঁটাতার।


আমরা মেঘেরা হাওয়ার ডানায় ভেসে

কত পথ চলি হিসেব থাকে না তার

মানুষেরা শুধু দ্বন্দ্ব-বিবাদ করে

মানুষের শুধু দেশভাগ কাঁটাতার।


মানুষেরা কেন কাঁটাতার ভালোবাসে?

হিংসা বা দ্বেষে কেন যে বিবাদমান!

কেন যে শেখেনি ভালোবেসে বেঁচে থাকা,

নদী বা বাতাস,মেঘ-পাখিদের গান।


বিপ্রলব্ধ


ত্রাহ্যস্পর্শে তিথিক্ষয়ে চাঁদের দেখা নেই

মঞ্জুষাতে লক্ষ্ণীকে নয়, চাইছি তোমাকেই।

তামরসের মতোই তুমি, মুগ্ধ হয়ে থাকি

ধৈবতহীন আরোহণে তিলক কামোদ রাখি।

অনিকেত শব্দচাষী বন-পাহাড়ে ঘুরি

স্মিত হাসির ময়ূখছটায় মন করেছ চুরি।

ভৈরবের ওই বিরহী সুর পাখির ডাকে ঝরে

বিপ্রলব্ধ, বিহানবেলায় বড্ড মনে পড়ে।


শব্দার্থ ঃ-

তিথিক্ষয় ~ একদিনে দুই তিথির ক্ষয় হয়ে তৃতীয় তিথির সংযোগ; ত্রাহ্যস্পর্শ; অমাবস্যা।

মঞ্জুষা ~ লক্ষ্ণীর ঝাঁপি।

তামরস ~ পদ্ম।

তিলক কামোদ হল একটা রাগ।এই রাগে অবরোহণে সাতটি সুর থাকলেও আরোহণে ধা বা ধৈবত সুরটি থাকে না।

অনিকেত ~ গৃহহীন পথিক।

শব্দচাষী ~ কবি।

ময়ূখ ~ রশ্মি।

ভৈরব হল প্রভাতকালীন একটা রাগ।ভোর বেলা গাওয়া হয় এই রাগ।

বিপ্রলব্ধ অর্থ বঞ্চিত বা প্রতারিত।

বিহানবেলা মানে সকালবেলা।


পাতকী


এসেছে প্রেমিক যুবা প্রেম ভেঙে গেলে,

পাষণ্ড পুলিশ থেকে ডাকাতের দল-

সব্বাই এসেছে, আর ঢেলে গেছে বিষ।

ধোয়া তুলসী পাতা যে, সেও তো এসেছে!

এঁটো পাতে চেটেপুটে খেয়ে চলে গেছে।

এসেছে উকিল বাবু, এসেছে সন্ন্যাসী;

মুখ পাল্টাতে এসেছে গৃহস্থ মানুষ।

এসেছে জুতো বিক্রেতা, জুতো কেনে যারা,

তারাও এসেছে সব গাঁ উজাড় করে।

কী নেবে গো দেহ থেকে? দেহে কীই বা আছে?

নর দেহে যত পাপ সব মুছে নিয়ে

রক্ত-মাংস-বিষ মেখে অন্তরে-অন্তরে

ধর্ষিত হয়েছি রাতে অযুত বছর।

সমস্ত শরীর দিয়ে বিষ শুষে নিয়ে

অপবিত্র তবু আমি কুলটা, পাতকী!


*Sudipta Biswas,(WBCS Exe.),

Nokari Uttar Para, PS-Ranaghat,Dist- Nadia,Pin- 741202

Mob-9836020902

শংকর ব্রহ্মের কবিতাগুচ্ছ--


শংকর ব্রহ্মের কবিতাগুচ্ছ--

------------------------


১)


বইছে তুফান

-------------------------


দেশে এখন বইছে তুফান , নদীতে বান 

                                   লাগিয়ে জান বাজি

হাওয়ার মুখে পাল তুলে দাও 

                                      ওগো সুজন মাঝি।


নিরুদ্দেশের পথে এখন যাদের অভিযান

                              ডুববে নাকি ভাসবে তরী

ভাবলে এখন থাকবে তাদের মান?

            বিপদ আপদ তুচ্ছ সেটা মন মানে না

জীবন নদীর শেষ যে কোথায় কেউ জানে না।


দেখছি নদী খরস্রোতা 

                     হয়তো কোথাও ভাসিয়ে নেবে

তাই বলে কি এই তুফানে তরী ছেড়ে 

                           হঠাৎ কোথাও পালিয়ে যাবে?


--------------------------------------------------------------

২)


বোঝা

-------------------


ভুল বোঝা আর সঠিক বোঝা

                                 নয়কো মোটেই খুবই সোজা,

ভুল বোঝা আর সঠিক বোঝায়

                                      দূরহ খুবই তফাৎ খোঁজা।

একটি তোমার বিপক্ষে যায়

                     অন্যটি যায় পক্ষে,সেইটুকু যা রক্ষে।


দু'টোই দেখ বোঝার মতো মাথায় চেপে রইবে,

      মাঝে মাঝেই মনটা তোমার অন্য কথা কইবে। 

ভুল বোঝা আর সঠিক বোঝা

                                 নয়কো মোটেই খুবই সোজা।


--------------------------------------------------------------

৩)


আমার ভিতরে আমি

-------------------------------


আমার ভিতরে আমি

                         ক্রমাগত নেমে যেতে থাকি

দেখি,গভীরে আমার তীব্র জ্বালা , দগ্ধ দহন

                      বুকের ভিতর এক নদী জল, 

শোকের ছায়ায় এক নিমেষে ব্যথার কাহন

                      তোমার প্রেমের সবটাই ছল?


মনের ভিতর চৈত্র শেষের শূন্যতা আজ

বুকের গভীরে আনমনা করা মেঘলা আকাশ,

হঠাৎ কেন যে নেমে আসে, দেখি বিদ্যুৎ বাজ

                      ছলনা তোমার দারুণ , সাবাস।


ভিতরে আমার একটি হৃদয় 

                                         পুড়ে যেতে থাকে

গভীরে আমার আর এক হৃদয়

                                             চুপ করে দেখে।


এতদিনে যেন মানুষটি শোকে  

                                               পাথর হয়েছে,

গভীরে আমার অন্য মানুষ

                                             জ্বলছে,পুড়ছে।


--------------------------------------------------------------

৪)


আমি ভাল নেই

---------------------------


                                 তোমার অভাবে

সমস্ত দেয়াল জুড়ে লিখে রাখব

                                'আমি ভাল নেই'

আমার নিজের ছায়া বলে উঠবে

                                 'আমি ভাল নেই' 


পরিযায়ী পাখিরা এসে এই শীতে

শিখে নেবে এই সুরে গান,

'তুমি কাছে নেই তাই,আমি ভাল নেই'।


                                 তুমি কাছে নেই

তাই সমস্ত আকাশ জুড়ে জ্যোৎস্নাকে

           মনে হয় গ্রীষ্মের প্রখর রোদ্দুর।


--------------------------------------------------------------

৫)


নেই ভাবতে নেই

---------------------------


নেই ভাবতে নেই,নেই ভাবলে ফাঁকা ফাঁকা লাগে, 

মনে কর আছে ধারে কাছে কয়েকটি নক্ষত্র ছড়িয়ে, 

            কিংবা আকাশের বুকে ভেসে আছে চাঁদ 

ইচ্ছে হলে ভাব সেও আছে ধারে কাছে

    যাকে তুমি গভীর গোপন টানে মনে প্রাণে চাও।


নেই ভাবতে নেই, নেই ভাবলে উর্বর জমিতে ঢুকে পড়ে নোনা জল

    বরং ভাব,সারা মাঠে সোনার ফসল ভরে আছে 

গাছে গাছে ফুটে আছে ফুল

বিলকুল ভরে আছে সবই,যেখানে থাকার কথা যা যা। 


তোমার একান্ত যা চাই সবই আছে মজুত ভান্ডারে

            প্রয়োজনে তোমাকে তা বুঝে নিতে হবে। 


--------------------------------------------------------------

৬)


বাউল

--------------------------------------------------------------

আমার ভিতরে,অহংকারী এক উজবুক বাস করে 

তাকে আমি মনে মনে ঘৃণা করি খুব,অবহেলা করি 

                                    তবু সে চায় না যেতে ছেড়ে

আমার ভিতরে হিংসুটে স্বার্থপর একজন থাকে 

একান্ত গোপনে যে আমাকে ভুল পথে 

ডেকে নিয়ে যেতে চায় বারবার,হাতছানি দেয়

আমি তাকে বোঝাতে পারি না কিছুতেই 

দেখাতে পারি না হৃদয় খুলে

                    আমার ভিতরে থাকা নির্লিপ্ত বাউল।


-------------------------------------------------------------

৭)


স্বাধীনতা

-------------------


আমরা কেউ কোন অভিযোগ করতে পারি না

কেন না,আমরা কেউই এর বাইরে নয় 

তবু আমরা বিস্মৃত হই না, যে আমরা ক্ষুধার্ত।


ঘাস বেড়ে ওঠে দিন দিন,জাতীয় উৎপাদন

কেউ আমরা গরু ছাগল নই, 

                                        কে বোঝাবে কাকে? 

তবু স্মৃতি বেড়ে ওঠে এবং বাড়ে ইতিহাস।


রাস্তাগুলি সবই বন্ধ,চুক্তির ধার বাড়ছে ক্রমশ  

অথচ কোন বিপদ সংকেত নেই

                                    যে যেমন খুশি হাসছে।


এখন শূন্যতা শুধু ধূ ধূ মাঠে,

        আমরা কোন অভিযোগ করতে পারি না

কারণ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি

                                       সত্তর বছর আগেই।


--------------------------------------------------------------  

৮)


খোঁজা

---------------------


(এক).


                       যখন তোমার পাই না দেখা

ঘুরি তখন একা একা

                           বন-বাদারে কাহার তরে,

জানি না যে আমি নিজে,কীসের খোঁজে!


আবার তোমার দেখা পেলে

                        হেসে খেলে দিন যে ফুরায়

চিত্ত হারায় তোমার মাঝে,

        আমি তখন আর কিছুই খুঁজি না যে।


( দুই)


ভিতরে ছিল চাঁদের আলো     বাইরে অন্ধকার

খোলা ছিল সেদিন তোমার     মনের যত দ্বার।

কোন চাবিতে খুলে ছিল        জানা হয়নি আর

সেই চাবিটা হারিয়ে গেছ     খোঁজ পাইনি তার।


খুঁজে বেড়াই সেটাই এখন

                       হারিয়ে গেছে কোথায় সে ধন

খুঁজছি আমি সেটাই শুধু      সারা জীবন ধরে  

গ্রাম ছাড়িয়ে  শহর ছেড়ে    বাইরে এবং ঘরে।


--------------------------------------------------------------

৯)


অমরতা 

--------------------


কালের প্রবল স্রোতে মানুষ হারিয়ে যায় একদিন ঠিকই

        কিন্তু মানবতা থেকে যায় তার অমরতা পায় 

একটি জীবন হয়তো মৃত্যুর কাছে 

                                    সাময়িক হেরে যেতে পারে

অথচ সমগ্র মানব জীবন মৃত্যুকে অবহেলা করে

         জীবনের জয়গান গেয়ে যায় চিরকাল ধরে। 


কিন্তু মানবতা হারায় যদি হীন স্বার্থের কারণে

                              আমাদের জীবন যাপন থেকে

তাহলে মৃত্যুকে তুচ্ছ ভেবে

                  মানুষ আর অমরতা খুঁজবে কোথায়?


--------------------------------------------------------------

১০)


বিশ্ব ভাষা দিবস              

--------------------------   

 

                        

                             দিনটি একুশে ফেব্রুয়ারী

নত মস্তকে প্রাণের আবেগে 

                                 আজকে তাদের স্মরি

বাঁচাতে সেদিন বাংলা ভাষার মান

           অকাতরে যারা সঁপে ছিল নিজ প্রাণ 


তাদের অমূল্য সেই দান

                আজ পেয়েছে সারা বিশ্বে সম্মান

সগৌরবে অর্জন করেছে

                               বিশ্বভাষা দিবসের স্থান

আমরা যারা বাংলা ভাষা-ভাষি 

                                   বেড়েছে তাদের মান। 


আজ বিশ্ব ভাষা দিবসের দিনে 

                               কিংবা তার আগে পরে

ভাষার স্বাধীনতার জন্য

                            যারা আজও লড়াই করে 

তাদের কথা ভেবে 

                  আমরা সবাই উর্ধ্ব শিরে 

                  বুক চিতিয়ে করতে পারি বড়াই। 


বাংলা ভাষার প্রাণ ও মান বাঁচতে   

                                   দিয়ে ছিল যারা প্রাণ

সেই একুশে ফেব্রুয়ারী 

আজকে তাদের নত মস্তকে 

                                       হৃদয়ে স্মরণ করি।


--------------------------------------------------------------


১১)


সঙ্গী যাদের ফেসবুক

-------------------------------


                   টুকটাক বাইরের কাজকর্ম সেরে

ঢুকে পড়ি আমি টুক করে ফেসবুকের ভিতরে, 

আনন্দে কেটে যায় তাকে নিয়ে সারাদিন ধরে।


এই করেই যে কাটছে আমার দশটি বছর ধরে

        হেডমাষ্টারি থেকে অবসর নেওয়ার পরে। 


এখানে কত সুজন সখা এখানে কত সাথী, 

কালকে যাকে চিনতামও না বন্ধু রাতারাতি। 


কেউ আসে,কেউ ফিরেও যায় থাকে না চিরকাল,

বলতে পার এই সময়ে এটাই- যুগের রীতি, হাল। 


তাই, ভাবি না আর ও সব নিয়ে যে থাকে,তাকে রাখি

মনে থাকে না তাদের কথা,যায় যারা, বাদ বাদ বাকি। 


--------------------------------------------------------------

১২)


নতুন বছর আসছে বলে

-----------------------


নতুন বছর আসছে বলে,বুকের ভিতর উঠছে ঢেউ

নতুন বছর আসছে বলে নতুন করে আসছে কেউ?

আসছে বলেই নববর্ষ লাফাচ্ছ খুব মনে,

ভাবছ না তো থাকবে যে কে থাকবে না কোন জনে।

নতুন বছর আসছে বলে আকাশ বাতাস রঙিন হলো

নতুন বছর আসছে বলে কেউ কি কারও মন রাঙালো?

আসছে বলেই নববর্ষ ফুরিয়ে যাচ্ছে জীবন

এই কথাটা ভাবার সুযোগ দিচ্ছে নাকি মন। 

নতুন বছর নতুন বছর বলো তোমার নতুন খবর

নতুন বছর আসছে বলে জিনিষেরও  কি কমলো দর?

নতুন বছর আসবে যাবে তাতে তোমার আমার কি? 

আমরা তো সেই পুরনো গড্ডালিকা প্রবাহেই ভাসছি।


--------------------------------------------------------------

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা--

অদিতি ঘটকের দুটি কবিতা-- জীবাশ্ম আর পাপোশে ধুলো ঝেড়ে ঘরে ঢুকি না  কারন ধুলোই আমার আবাস আর আমি সেই ধুলোর মধ্যে মিশে থাকা জীবাশ্ম ...